সমরেশ মজুমদার কে নিয়ে বক্তৃতা

Spread the love

অদ্ধকার আয়োজিত আড্ডা অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে আমার আন্তরিক সালাম ও শুভেচ্ছা।

সমরেশ মজুমদার একজন ভারতীয় বাঙালি কথাসাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক। তিনি গত ৮ মে ২০২৩  ফুসফুস ও শ্বাসনালি সংক্রমণের কারণে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাই আজ আমি কথাসাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক সমরেশ মজুমদার সম্পর্কে কিছু বলার চেষ্টা করছি। 

তিনি  ১৯৪৪ সালের ১০ মার্চ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। 

তাঁর শৈশব কেটেছে ডুয়ার্সের গয়েরকাটা চা বাগানে। তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় জলপাইগুড়ি জিলা স্কুল থেকে। তিনি কলকাতায় আসেন ১৯৬০ সালে। কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করেন তিনি। তাঁর লেখা উপন্যাস ‘উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ’ বাংলা সাহিত্য জগতে তাঁকে বিশেষ খ্যাতির অধিকারী করেছে। তিনি বেশ কিছু সফল টিভি সিরিয়ালেরও কাহিনিকার। সমরেশ মজুমদার কলকাতা ও বাংলাদেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা লেখক হিসেবে পাঠকমন জয় করেছেন। এছাড়াও তার সৃষ্ট চরিত্র অর্জুন ও মাধবীলতা ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশেই সমান জনপ্রিয়। জনপ্রিয় এই লেখক অসংখ্য সম্মাননা অর্জন করেছেন।

কর্মজীবনে তিনি আনন্দবাজার পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গ্রুপ থিয়েটারের প্রতি তাঁর প্রচণ্ড আসক্তি ছিল। তাঁর প্রথম গল্প ‘অন্যমাত্রা’ লেখা হয়েছিল মঞ্চনাটক হিসেবে, আর সেখান থেকেই তাঁর লেখকজীবনের শুরু। তাঁর লেখা অন্যমাত্রা ছাপা হয়েছিল দেশ পত্রিকায় ১৯৬৭ সালে। সমরেশ মজুমদারের প্রথম উপন্যাস ‘দৌড়’ ছাপা হয়েছিল দেশেই ১৯৭৫ সালে। তিনি শুধু তাঁর লেখনী গল্প বা উপন্যাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি; ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি থেকে গোয়েন্দাকাহিনি, কিশোর উপন্যাস লেখনীতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। তাঁর প্রত্যেকটি উপন্যাসের বিষয় ভিন্ন, রচনার গতি এবং গল্প বলার ভঙ্গি পাঠকদের আন্দোলিত করে। সমরেশ মজুমদারের উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলোর মধ্যে সাতকাহন, তেরো পার্বণ, স্বপ্নের বাজার, উজান, গঙ্গা, ভিক্টোরিয়ার বাগান, আট কুঠুরি নয় দরজা, অনুরাগ ইত্যাদি। অনেক অসাধারণ লেখনীর শব্দের এই রূপকার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অনেক পুরস্কার অর্জন করেছেন। ১৯৮২ সালে আনন্দ পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার, এরপর বঙ্কিম পুরস্কার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছ থেকে পেয়েছেন ‘বঙ্গবিভূষণ’ খেতাব । 
গত ২৫ এপ্রিল মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল৷ গত ৮ মে ২০২৩ চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আমরা এই গুনীজনের আত্মার শান্তি কামনা করছি। ধন্যবাদ সবাইকে।

Scroll to Top