বল বীর –
বল উন্নত মম শির!
শির নেহারি আমারি, নত-শির ওই শিখর হিমাদ্রীর!
অদ্ধকার আয়োজিত আড্ডা অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে আমার আন্তরিক সালাম ও শুভেচ্ছা।
গতকাল ছিল ১১ জ্যৈষ্ঠ। সাম্যের কবি, বিরহ-বেদনার কবি, বিদ্রোহের কবি, বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪ তম জন্মবার্ষিকী। তাই আজ আমি কাজী নজরুল ইসলাম সম্পর্কে কিছু বলার চেষ্টা করছি।
কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬, ইংরেজি ২৪ মে ১৮৯৯ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের চুরুলিয়া গ্রামে এই মহান কবির জন্ম। তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর একজন বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, দার্শনিক এবং সঙ্গীতজ্ঞ। যিনি বাংলা কবিতায় অগ্রণী ভূমিকার পাশাপাশি প্রগতিশীল প্রেরণার জন্য সর্বাধিক পরিচিত ছিলেন। তার কবিতা ও গান পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে সমানভাবে প্রশংসিত। তাঁর কবিতায় বিদ্রোহী মনোভাবের কারণে তাঁকে বিদ্রোহী কবি বলা হয়েছে। তাঁর কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের নিপীড়ন এবং সামাজিক অন্যায় ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ফলে তাকে বিদ্রোহী কবি বলা হয়।
কাজী নজরুল ইসলাম বেঁচেছিলেন ৭৭ বছর। জন্মের পর থেকে মাত্র ৪৩ বছর বয়স পর্যন্ত স্বাভাবিক জীবন কাটিয়েছেন। এর মধ্যে সাহিত্য রচনার কাল ছিল মাত্র ২৪ বছর।
তার লেখা উপন্যাস গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ বাঁধনহারা, মৃত্যুক্ষুধা, কুহেলিকা। উল্লেখযোগ্য গল্পগ্রন্থ হলোঃ ব্যথার দান, রিক্তের বেদন, শিউলিমালা, হক সাহেবের হাসির গল্প, সাপুড়ে। এছাড়াও নজরুলের গানের সংখ্যা চার হাজারের অধিক। যে গানগুলো নজরুল সঙ্গীত নামে পরিচিত।
তিনি ‘ধূপছায়া’ নামে একটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন। এতে একটি চরিত্রেও অভিনয় করেছেন তিনি। ১৯৪৫ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বাংলা সাহিত্যের সর্বোচ্চ পুরস্কার জগত্তারিণী স্বর্ণপদক লাভ করেন।
১৯৭২ সালের ২৪ মে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে কবি সপরিবারে বাংলাদেশে আসেন। বাংলাদেশ সরকার কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করেন এবং জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা দেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশেই ছিলেন। ১৯৭৪ সালে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সম্মানসূচক ডি.লিট. পুরস্কার এবং ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশে সরকার কর্তৃক একুশে পদকে ভূষিত হন।
১৯৪২ সালের জুলাই মাসে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ১৯৭৬ সালের ২৭ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশে সমাহিত করা হয়।